হাওজা নিউজ এজেন্সি: আশুরার এক শোক অনুষ্ঠানে ইরাকের আহলুল হক ব্রিগেডের মহাসচিব শেখ কায়েস খাজালি বলেছেন—ইরাকের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য জাতীয় ঐক্য এবং বহিরাগত আধিপত্য, বিশেষত আমেরিকান হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ একান্ত প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “এই দিনটি—ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদাতের বার্ষিকী—মানব ইতিহাসের এক অনন্য অধ্যায় ও সত্য ও মিথ্যার মধ্যকার স্পষ্ট সীমারেখা। এই বিপ্লব মানবতার সম্মান, আত্মত্যাগ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর এক সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত।”
তিনি আরও বলেন, “ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কারবালার কিয়াম ক্ষমতার লোভে নয়, বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক চিরন্তন প্রতিবাদ—যা ধর্মের সঙ্গে দুনিয়াবী স্বার্থের আপস প্রত্যাখ্যান করে এবং ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও মানব মর্যাদা রক্ষার শপথ বহন করে।”
শেখ খাজালি বলেন, “আজকের দিনে আমাদের উচিত, কারবালার মূল আদর্শ ও শিক্ষা বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত করা। এখনো ইরাক বিদেশি হস্তক্ষেপে জর্জরিত এবং দেশের ভেতরকার বিভাজন ও দ্বন্দ্ব তার ঐক্য ও নিরাপত্তাকে বিপন্ন করছে।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এমন প্রেক্ষাপটে ইমাম হুসাইনের (আ.) পথ আমাদের ওপর একটি ঐশী দায়িত্ব অর্পণ করেছে—সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক, সামরিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাগতভাবে স্বাধীন এক ইরাক গঠন করা এবং আমেরিকাসহ সব ধরনের আধিপত্যবাদ মোকাবিলা করা, যারা ২০০৩ সালের দখলদারিত্ব থেকে আজ পর্যন্ত দেশটিকে ধ্বংস ও সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
শেখ খাজালি আরও বলেন, “কারবালা আমাদের শেখায় যে অন্যায়ের মুখে নীরবতা এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা, এবং অত্যাচারী শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ হুসাইনি পথের অনুসারীদের জন্য কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। কাজেই ইরাকের ভূমি, মানুষ ও ভূখণ্ডের ঐক্য রক্ষা করা এখন আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব। দলীয়, গোষ্ঠীগত বা সাম্প্রদায়িক স্বার্থকে জাতীয় স্বার্থের ওপরে স্থান দেওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই।”
তিনি আহ্বান জানান, “এই চিরন্তন দিবসে আমাদের উচিত, জাতিগত বিভাজন, অপমানজনক প্রকল্প ও সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনার বিরুদ্ধে একক কণ্ঠে রুখে দাঁড়ানো এবং ঐক্যবদ্ধ হওয়া। কেবল ইরাকের জনগণের—নারী-পুরুষ সবার—সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টায় দেশ স্বাধীনতা, মর্যাদা ও ক্ষমতা অর্জন করতে সক্ষম হবে।”
আপনার কমেন্ট